সৃষ্টির আদিতে প্রকৃতির বুকে অসহায় মানুষ জগৎ সৃষ্টির অন্তরালে ঈশ্বর নামক এক অতিশক্তির কল্পনা করেছিল । আর তারা এই অতিশক্তি কল্পনা করেছিল পৃথিবী নানা অজানা শক্তির প্রতি ভীতী থেকে। ঝড়- বৃষ্টি ,বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জীবনপথের চড়াই-উৎরাই, নানা বাধা-বিপত্তি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ঈশ্বরের। উত্তরাধিকারসূত্রে এই ধ্যান-ধারণা মানুষের মধ্যে চলে আসছে সেই আদিকাল থেকে। আর এই ঈশ্বরের উপর ভরসা করেই মানুষ তার জীবনের পথে এগিয়ে চলে । ফলে মানষই ঈশ্বর গড়ে, তার কৃপা পাবার আশায় ।ফলে দেব মহিমা মানুষের ভরসার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে ।অর্থাৎ ঈশ্বরের মহিমা মানুষের স্বয়ং সৃষ্ট।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে মানুষ আজ ঈশ্বরকে ভক্তি ভরসা করার বদলে তাকে নিজেদের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের আবরণে ঢেকে দিচ্ছে ।তারা এটা করছে কিছুটা তাদের স্বার্থপূরণ ও অর্থ উপার্জনের লোভে । ফলে তাদের কুঅভিসন্ধি ফাঁদে পা দিয়ে মানুষ মিথ্যে জাতপাত নিয়ে মাথা ঘুমাচ্ছে । ফলে মিথ্যা আচরণের ফাঁদে পড়ে একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে । মানুষের মানুষের হানাহানি বাড়ছে ,বাড়ছে অবিশ্বাস । ফলে ধর্মগুরু, পুরোহিতগন, এই সুযোগে মুনাফা লাভ করছেন। এছাড়া ঈশ্বরের পূজা অর্চনার জন্য আরম্বর ও আচার সর্বস্বতাকেই বেশি করে নজর দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঈশ্বর সাধনা ক্রমশ ব্যক্তি চাহিদা পূরণের যন্ত্রে পরিণত হয় । মানুষের কল্পনা প্রতি পদে মানুষকেই পর্যদুস্ত করে।
কিন্তু মানুষের মনে রাখা উচিত যে মানুষ ঈশ্বরকে সৃষ্টি করেছে। মানুষের ভয়-ভীতি সব কিছুই সৃষ্টি করেছে ঈশ্বরকে। সুতরাং ঈশ্বরের সৃষ্টি কর্তা হলো স্বয়ং মানুষ। ঈশ্বরের মহিমার আড়ালে তাই লুকিয়ে আছে মানুষের মহিমা । তাই মিথ্যা আরামবাগে আরম্ররকে বাদ দিয়ে ঈশ্বরের বদলে মানুষকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতে হবে ।শিব জ্ঞানে জীব সেবা করাই প্রকৃত ঈশ্বর ভজনা হবে। কারণ মানুষই ঈশ্বর কে সৃষ্টি করেছে তার কৃপা লাভের জন্য ।ঈশ্বরের মহিমা প্রকৃতপক্ষে মানুষের মহিমা। কারণ মানুষের জন্যই ঈশ্বর , ঈশ্বরের জন্য মানুষ নয়।